১৫ আগস্ট নজিরবিহীন নিরাপত্তার চাদরে পুরো দেশ, প্রস্তুত স্পেশাল ফোর্স

  বিশেষ প্রতিনিধি    14-08-2023    76
১৫ আগস্ট নজিরবিহীন নিরাপত্তার চাদরে পুরো দেশ, প্রস্তুত স্পেশাল ফোর্স

১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদৎবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশকে কঠোর নিরাপত্তার চাদরে ঢেকেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। বিশেষ করে রাজধানীজুড়ে থাকবে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পুরো ঢাকা শহরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে। সাইবার ওয়ার্ল্ডও মনিটরিং করছে তারা। এছাড়া যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তত রাখা হয়েছে স্পেশাল ফোর্স। অন্যদিকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) হেলিকপ্টারও প্রস্তুত থাকবে সার্বক্ষণিক। যেকোনো পরিস্থিতিতে হেলিকপ্টার উড়বে দেশের যে কোনো স্থানে।

জেলা পুলিশ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি), ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পাশাপাশি কাজ করছে এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।

ঢাকা মহানগর পুলিশের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগো নিউজকে বলেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে দিনকে দিন চাপ বাড়ছে। সেই দিক বিবেচনা করেই এবার জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে কোনো ধরনের নিরাপত্তাজনিত ফাঁক রাখা হচ্ছে না।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, নানা কারণে এবার জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পালন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের নিরাপত্তা জোরদার করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। যাতে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়।

সূত্রটি বলছে, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরসহ পুরো দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের আশপাশের সব হোটেল রেস্তোরাঁ ও মেসে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। ৩২ নম্বর বাড়ির প্রতিটি প্রবেশ পথে বসানো হয়েছে আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর। বিশেষ নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে থাকছে সরকার সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু ব্যক্তি ও স্থাপনা। রাজধানীতে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। বিশেষ বিশেষ স্থান সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। আশপাশের ভবনগুলোতে বসানো হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। সেখান থেকে শক্তিশালী সিসি ক্যামেরা দিয়ে পুরো এলাকার ওপর নজর রাখা হচ্ছে। স্থাপন করা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।

জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে পুলিশি টহল জোরদার এবং বিট পুলিশ কর্মকর্তাদের নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে সরব উপস্থিতি ও নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর থেকে। এ উপলক্ষে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও আয়োজকদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সমন্বয়ের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

সিটিটিসি জানায়, গত ২৩ জুন রাতে রাজধানীর ডেমরা এলাকা থেকে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার শামিন মাহফুজ ও তার স্ত্রী নাজনীনকে গ্রেফতার করা হয়। শামিন মাহফুজের নেতৃত্বেই দেশ-বিদেশ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে নতুন এ জঙ্গি সংগঠনটি। তবে এক্ষেত্রে জঙ্গি প্রশিক্ষণ বা সংগঠনের নাম ব্যবহার করেননি তারা। ধর্মভীরু মানুষদের পাহাড়ে মসজিদ নির্মাণ, ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়াসহ ধর্মীয় কাজে খরচের কথা বলতেন শীর্ষ এ জঙ্গি।

র্যাব সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জঙ্গি গ্রেফতার হয়েছে। নতুন জঙ্গি সংগঠনের আমির আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাসহ মোট ৮২ জন এবং পাহাড়ে অবস্থান, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য কার্যক্রমে জঙ্গিদের সহায়তার জন্য পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘কেএনএফ’র ১৭ জন নেতা ও সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।

র্যাব ফোর্সেস নতুন এ জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্যাদি প্রথমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে এবং সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করার জন্য আবেদন করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র কার্যক্রম জননিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বিবেচিত হওয়ায় সংগঠনটিকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হয়।

জঙ্গি নিয়ে কাজ করা পুলিশ ও র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, নতুন জঙ্গি সংগঠনের নেতৃস্থানীয় পর্যায়ের বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা গেলেও এখনো অনেকেই পলাতক রয়েছেন। এরমধ্যে গত বছরের নভেম্বরে ঢাকার আদালত থেকে দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। আট মাস পেরিয়ে গেলেও পলাতক দুই জঙ্গিকে গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এজন্য এবারের জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে চলছে ব্লক রেইড

১৫ আগস্ট জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে চলছে ব্লক রেইড ও বিশেষ অভিযান। শনিবার (১২ আগস্ট) থেকে শুরু হওয়া ব্লক রেইড চলমান থাকবে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের সই করা এক আদেশে এ তথ্য জানা জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে কমিশনারের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করেছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনাররা (ডিসি)।

ডিএমপির আদেশে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগরীর আইনশৃঙ্খলা ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণ এবং ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগর এলাকায় নাশকতা, নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা ও ধ্বংসযজ্ঞ এবং সোশ্যাল/ইলেক্ট্রনিক/প্রিন্ট মিডিয়ায় গুজব ও অপপ্রচারের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা প্রতিরোধকল্পে আগে থেকেই অপরাধ দমনে প্রস্তুতি গ্রহণ ও প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম পরিচালনার প্রয়োজন রয়েছে। কোনও সন্ত্রাসী/নাশকতাকারী জঙ্গি গ্রুপ যাতে কোনও বাসাবাড়ি, আবাসিক হোটেল, মেস, ব্যক্তিসহ যেকোনো এলাকায় আশ্রয় বা অবস্থান নিতে না পারে, সেজন্য এলাকাভিত্তিক ব্লক রেইড, তল্লাশি ও চেকপোস্ট কার্যক্রম পরিচালনা এবং অনলাইনে গুজব ও অপপ্রচার রোধে নজরদারির মাধ্যমে যেকোনো ধরনের চক্রান্ত নাশকতামূলক ষড়যন্ত্র বানচাল ও তাদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ১২ আগস্ট থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত ব্লক রেইড ও বিশেষ অভিযান পরিচালনা করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।

এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ব্লক রেইড বা বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আগস্ট মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ষড়যন্ত্রকারীরা অপতৎপরতায় লিপ্ত থাকে এ মাসকে কেন্দ্র করে। সব ধরনের বিষয় মাথায় রেখে নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে ডিএমপি। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা মোতায়েন করা হয়েছে। ধানমন্ডি-৩২’র সামনে দুই সড়কের মধ্যে এক সড়ক বন্ধ থাকবে।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জাগো নিউজকে বলেন, রাজধানীজুড়ে ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে থানা পুলিশের সঙ্গে ডিবির সদস্যরা সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছেন। বিভিন্ন হোটেল-মোটেলে তল্লাশি করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কোনো হুমকি নেই। তবে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তত রয়েছি। ধানমন্ডি-৩২ নম্বর ও বনানী কবরস্থানসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পর্যাপ্ত সংখ্যক গোয়েন্দা পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জাগো নিউজকে বলেন, ১৫ আগস্ট উপলক্ষে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় র্যাবের স্বাভাবিক কার্যক্রমের চাইতে টহল, নিরাপত্তা জোরদার, চেকপোস্ট স্থাপন, স্পেশাল ফোর্সের অ্যাক্টিভিটিজ ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। র্যাবের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এখন পর্যন্ত কোনো হুমকি নেই। র্যাব সদরদপ্তর ও ব্যাটালিয়নের গোনেন্দা দল এসব অনুষ্ঠানে গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রাখছে। পাশাপাশি যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা মোকাবিলার জন্য র্যাবের সব স্ট্রাইকিং ও স্পেশাল ফোর্স প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি র্যাবের হেলিকপ্টার সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সাইবার জগতকে নজরদারির জন্য র্যাবের সাইবার মনিটরিং সেল সার্বক্ষণিক কাজ করছে। ১৫ আগস্ট উপলক্ষে সাইবার ওয়ার্ল্ডে কোনো হুমকি রয়েছে কি না তাও মনিটরিং করা হয়। সন্দেহভাজন মনে হলে নজরদারিতেও রাখা হচ্ছে।

সার্বিক পরিস্থিতি জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক জাগো নিউজকে বলেন, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগরী জুড়ে নিশ্ছিদ্র ও সুসমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকছে। নির্বাচনের বছর হওয়ায় লোক সমাগম বিগত বছরের তুলনায় বেশি হবে। সে বিষয়টি মাথায় রেখেই পুরো এলাকা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ডিএমপি গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা প্রত্যেককে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশি চেকপোস্ট ও আর্চওয়ে গেটের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। জনশৃঙ্খলার স্বার্থে সবাইকে পূর্বপাশের গেট দিয়ে প্রবেশ করে পশ্চিম দিকের গেট দিয়ে একমুখী রাস্তায় বের হতে হবে। ব্যাগ বা অন্যকোনো কিছু সঙ্গে আনা যাবে না। সম্মানিত নগরবাসীকে কর্তব্যরত পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত জঙ্গি হামলার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। তবে জঙ্গি বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও একেবারে নির্মূল হয়ে যায়নি। এ বিষয়গুলো মাথায় রেখেই জাতীয় শোক দিবসের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে।

বন্ধ থাকবে রাজধানীর যেসব সড়ক

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদৎবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকায় বিভিন্ন সড়কে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ। এজন্য মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) যানজট এড়াতে বিকল্প পথ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদৎবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদার সঙ্গে পালিত হবে। এদিন রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যসহ বিভিন্ন স্তরের জনসাধারণ ধানমন্ডি–৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৫ আগস্ট ভোর হতে অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত গমনাগমনের জন্য নিম্নোক্ত পথ অনুসরণের অনুরোধ করা হলো-

>> মিরপুর ও গাবতলী থেকে আগত রাসেল স্কয়ার–আজিমপুর অভিমুখী যাত্রীবাহী যানবাহন মানিক মিয়া এভিনিউ–ধানমন্ডি ২৭ ডানে মোড় নিয়ে শংকর–জিগাতলা–সায়েন্সল্যাব (সাত মসজিদ রোড) হয়ে গন্তব্যে পৌঁছাবে।

>> নিউমার্কেট ও সায়েন্সল্যাব হতে আগত রাসেল স্কয়ার অভিমুখী যাত্রীবাহী যানবাহন ধানমন্ডি ২ নম্বর রোড থেকে বামে মোড় নিয়ে জিগাতলা–শংকর (সাত মসজিদ রোড) হয়ে গন্তব্যে পৌঁছাবে।

>> রেইনবো এফডিসি হতে আগত রাসেল স্কয়ার অভিমুখী যাত্রীবাহী বাস সোনারগাঁও ক্রসিং বামে মোড় নিয়ে বাংলামোটর দিয়ে শাহবাগ হয়ে গন্তব্যে পৌঁছাবে।

আমন্ত্রিত অতিথিদের গমনাগমনের পথ-

মানিক মিয়া এভিনিউ–ধানমন্ডি ২৭–মেট্রো শপিং মল ডানে মোড়–আহসানিয়া মিশন ক্রসিং বামে মোড়–৩২ নম্বর পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছাবে।

>> ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ব্রিজের উত্তরের ১১ নম্বর রোডের উত্তর ও পশ্চিম প্রান্ত (পতাকাবাহী, পিজিআর, এসএসএফ, ফায়ার সার্ভিস, বাহিনীর প্রধানসহ আইজিপি ও সচিব পদমর্যাদার সব গাড়ি)।

>> ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ব্রিজের দক্ষিণে পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্ত সংসদ সদস্যসহ রাজনৈতিক নেতাদের সব গাড়ি।

>> আহসানিয়া মিশনের উত্তর রাস্তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব গাড়ি।

>> নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজের ভেতরে বিদেশি কূটনৈতিক ব্যক্তিদের সব গাড়ি।

জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি

১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালন করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। প্রতিবারের ন্যায় এবারও শোকার্ত বাঙালি জাতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে দলটি ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে কেন্দ্রীয়ভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিনটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের কর্মসূচি হলো- ১৫ আগস্ট সোমবার সূর্য উদয়ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে সংগঠনের সব স্তরের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন।

সকাল সাড়ে ৬টায় জাতির জনকের ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত ধানমন্ডি ৩২ এ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ (রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে)। সকাল সাড়ে ৭টায় বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, মাজার জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ, মোনাজাত ও মিলাদ মাহফিল।

বেলা ১১টায় টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। ওই কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, গোপালগঞ্জ জেলা ও টুঙ্গীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা অংশ নেবেন।

বাদ জোহর কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। পাশাপাশি মন্দির, প্যাগোডা, গির্জা, উপাসনালয়ে দেশব্যাপী বিশেষ প্রার্থনা কর্মসূচির অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয়ভাবে সকাল ১১টায় মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে (৩/৭-এ সেনপাড়া, পর্বতা, মিরপুর-১০) বিশেষ প্রার্থনা, সকাল ১০টায় রাজধানীর মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ সম্প্রদায় এবং ১১টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় প্রার্থনা সভার আয়োজন করবে।

দুপুরে সারাদেশে অসচ্ছল, এতিম ও দুস্থ মানুষদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ ও গণভোজের আয়োজন করা হবে। বাদ আসর ধানমন্ডি ৩২ এ বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল (বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ)।

১৬ আগস্ট বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শোক দিবসের স্মরণসভা। ওই সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাতীয়-এর আরও খবর