আমরা ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি: শেখ হাসিনা

  বিশেষ প্রতিনিধি    14-10-2023    53
আমরা ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি: শেখ হাসিনা

নিউজ ডেস্ক : জনগণের ভোটের অধিকার আওয়ামী লীগই নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগই নির্বাচনী ব্যবস্থার উন্নতি করেছে। আজ শনিবার রাজধানীর কাওলায় সিভিল অ্যাভিয়েশন মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেছেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা এ দেশের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি। নির্বাচনী ব্যবস্থার উন্নতি করেছি। বিএনপি ২০০১-০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার লিস্ট তৈরি করেছিল। সেই ভুয়া ভোটার সরিয়ে দিয়ে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন করেছি। আমরা আইন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি।’ দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের আন্দোলন-সংগ্রাম জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায়। জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আপনারা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে আন্দোলন চালিয়েছেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে নিজেকে আবার প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন। ওই ভোট চুরির অপরাধে এই দেশের মানুষ কখনো ভোট চোরকে ক্ষমতায় থাকতে দেয় না। সেই অপরাধে তাঁকে দেড় মাসের মধ্যে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করেছি। সেই আন্দোলন আপনারা চালিয়েছেন।’ খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য বিএনপির অনশন কর্মসূচির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে দেখি খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিএনপি নেতারা অনশন করে। আমি জিজ্ঞেস করি তাঁরা কয়টা থেকে অনশন শুরু করেছিল? বাসায় কী দিয়ে নাশতা করে এসেছে? বাড়িতে কী দিয়ে ভাত খাবে। কয় ঘণ্টার অনশন? নাটক করারও একটা সীমা থাকে। এই নাটকই করে যাচ্ছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাঁরা নাকি আমাদের উৎখাত করে দেবে। সময় দিয়েছিল ১০ ডিসেম্বর। বিজয়ের মাসে আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করবে? যে সরকার জনগণের রায় নিয়ে বারবার নির্বাচিত হয়েছে। দেশের মানুষ এটা মেনে নিতে পারে না।’ বিএনপির দুর্নীতি, লুটপাট, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অর্থপাচারের কারণে ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সেই সময় মুচলেকা দিয়ে খালেদা জিয়ার ছেলে বিদেশে পালিয়ে যায়। যে নাকি জীবনে আর রাজনীতি করবে না। কিন্তু যে টাকা সে পাচার করেছে সেই মামলায় এফবিআই সাক্ষ্য দিয়ে গিয়েছিল। সে ওই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। তাদের ব্যবসা ছিল অস্ত্র চোরাকারবার, অর্থ পাচার।’ বিএনপি নেতাদের কাছে প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁর মা অসুস্থ। আপনারা অনশন করেন। তাহলে ছেলে কেন মাকে দেখতে আসে না। এটা কেমন ছেলে, সেটা আমার প্রশ্ন। মা অসুস্থ মরে মরে, সে নাকি যখন-তখন মরে যাবে। হ্যাঁ বয়সও হয়েছে, অসুস্থতো বটে। মাকে দেখতে আসে না কেন? আমিতো বলব মাকে দেখতে আসুক।’ বিএনপি ভোট কারচুপি করেছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অনেক সংগ্রাম করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। গণতান্ত্রিক ধারা থাকলে পরে একটা দেশের উন্নতি হয়, আর গণতান্ত্রিক ধারা যারা বিশ্বাস করে তারা ক্ষমতায় থাকলে দেশের যে উন্নয়ন হয় সেটা আজকে প্রমাণিত।’ ২০০১ সালে দেশের সম্পদ বিক্রির মুচলেকা দিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘গ্যাস বিক্রির প্রস্তাব আমার কাছেও এসেছিল। বলেছিলাম আমি শেখ মুজিবের মেয়ে দেশের স্বার্থ কখনো বেচি না। ক্ষমতার লোভ আমার নেই। খালেদা জিয়া এসে গ্যাসতো দিতেই পারেনি উল্টো বাংলাদেশকে পাঁচ পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করেছে। আর নিজে বিদেশ থেকে টাকা এসেছিল এতিমখানার জন্য, এতিম একটা টাকাও পায়নি, সব টাকা মেরে দিয়েছে।’ তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার নাইকো দুর্নীতি মামলার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে কানাডার পুলিশ এবং আমেরিকা থেকে গোয়েন্দা সংস্থার লোক আসার জন্য তৈরি। যখনই তারা আসতে বলে তখনই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে ক্ষমতার দাপট দেখিয়েছিল। ক্ষমতায় থাকতে সে বলেছিল, আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। বলেছিল শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী দূরে থাক বিরোধী দলীয় নেতাও হতে পারবেন না। আল্লার মাইর দুনিয়ার বাইর—এখন তিনি না প্রধানমন্ত্রী, না বিরোধী দলীয় নেত্রী। কিছু হতে পারেননি। কিন্তু দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁর বড়বোন, বোনের জামাই, ভাই আমার সঙ্গে গণভবনে দেখা করতে আসে। কান্নাকাটি করে। সরকার প্রধান হিসেবে আমি যতটুকু ক্ষমতা করি। যদিও ক্ষমতায় থাকতে আমাকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলা, কোটালিপাড়ায় বোমা পুতে রাখা, বারবার হামলা করেছিল। যখন সে এক একটা বক্তৃতা দিয়েছে তারপরেই হামলা হয়েছে। আল্লাহ আমাকে রক্ষা করেছে। নেতা-কর্মীরা জীবন দিয়ে রক্ষা করেছে। আমি তাঁকে বাসা থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’

জাতীয়-এর আরও খবর