আগে ধর্ষণ পরে হত্যা, আলামত নষ্ট করতে অপহরণ নাটক

  বিশেষ প্রতিনিধি    29-07-2023    103
আগে ধর্ষণ পরে হত্যা, আলামত নষ্ট করতে অপহরণ নাটক

টেকনাফের হ্নীলার পশ্চিম সিকদারপাড়া থেকে অপহৃত ফারিহা খানম জেরিনের লাশ উদ্ধার এবং অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যাকারীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫ এর সদস্যরা।

গ্রেফতারকৃত হত্যাকারী হলেন, হ্নীলার পূর্ব পানখালী এলাকার মুঃ আলী আহমদের ছেলে মোহাম্মদ এরফান (১৭)।

কক্সবাজার র‌্যাব অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) মোঃ আবু সালাম চৌধুরী গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যায় টেকনাফ থানাধীন হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম সিকদারপাড়া এলাকা থেকে ৩য় শ্রেণীতে মাদ্রাসা পড়ুয়া শিশু ফারিহা খানম জেরিন (০৮) কে অপহরণ করা হয়। পরে ভিকটিমের মায়ের নিকট ০১৮৪৬-৪৫৫৫০৫ নম্বর থেকে মোবাইলে ফোন দিয়ে মুক্তিপণ হিসেবে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে এবং মুক্তিপণ না দিলে সকালে মেয়ের লাশ পাবে বলে জানায়।

অপহরণের খবরটি বেশকিছু সংবাদপত্রে প্রকাশ এবং একই সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে ঘটনাটি সম্পর্কে র‌্যাব-১৫ অবগত হওয়া মাত্রই র‌্যাবের একাধিক আভিযানিক দল ভিকটিমকে উদ্ধারসহ অপহরণকারীকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি ও আভিযানিক কার্যক্রম শুরু করে।

এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (২৮ জুলাই) র‌্যাবের আভিযানিক দল মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে ভিকটিমের লাশ উদ্ধার এবং ঘটনার সাথে জড়িত মোহাম্মদ এরফানকে দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ জানা যায়, সে দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল আলী আহমদের ছেলে।

ধৃত আসামী এবং ভিকটিম ফারিহা খানম জেরিন বর্ণিত মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও দুঃসম্পর্কের মামা-ভাগ্নী। ঘটনার দিন অর্থ্যাৎ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফারিয়া খানম জেরিন বাড়ির পাশ্ববর্তী একটি দোকানে গেলে আসামী এরফান খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে সু-কৌশলে দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসায় তার বাবার অফিস কক্ষে নিয়ে যায় এবং দরজা বন্ধ করে হাত-পা বেধে তাকে ধর্ষণ করে।

এতে ভিকটিমের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য আসামী এরফান নাইলন দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে ভিকটিমকে হত্যা করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের পরিহিত কাপড়-চোপড় পলিথিনে করে আসামী এরফানের বাসার পার্শ্বে একটি নালায় লুকিয়ে ফেলে এবং গভীর রাতে লাশটি গুমের উদ্দেশ্যে উক্ত মাদ্রাসার পিছনে একটি নর্দমায় ফেলে চলে আসে। ধৃত আসামী আরো জানায়, সে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য অপহরণের ঘটনা সাজিয়ে মুক্তিপণের টাকা দাবী করে।

তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সারাদেশ-এর আরও খবর