মোটরসাইকেল যাত্রীদের টার্গেট করত সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র

  বিশেষ প্রতিনিধি    01-08-2023    118
মোটরসাইকেল যাত্রীদের টার্গেট করত সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র

কক্সবাজারের চকরিয়ার ফাসিয়াখালী-লামা-আলীকদম সড়কে চলাচলরত মোটরসাইকেলের যাত্রীদের টার্গেট করত একটি সঙ্ঘবদ্ধ ডাকাত চক্র। এছাড়া চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন বাড়িঘরেও হানা দিত চক্রটি। এ চক্রের মূলহোতা মো: তৈয়বসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে র্যাাব। এসময় উদ্ধার করা হয়েছে চারটি দেশীয় তৈরি এলজি বন্দুক, ৫ রাউন্ড গুলি, দুইটি রামদা, তিনটি মোটরসাইকেল ও ৭ টি মোবাইল সেট।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, চকরিয়ায় ফাসিয়াখালী এলাকার মো: নবী হোসেনের ছেলে তৈয়ব (২২) চিরিঙ্গা এলাকার মো: জাকারিয়ার ছেলে হাবিবুর রহমান প্রকাশ হাবিব (২৫), পশ্চিম পানখালী এলাকার মো: আমিনের ছেলে মিজানুর রহমান (২০) ও একই এলকার মৃত ফেরদৌস আহমদের ছেলে মোবারক হোসেন (২৬)।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে দুপুরে র্যা ব ১৫ এর কক্সবাজার কার্যালয় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এ সময় র্যাসবের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার জামিলুল হক জানান, গত ২৯ জুলাই রাতে বেতার শিল্পী জাফর আলম আজাদ মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার পথে কক্সবাজারের চকরিয়া লামা আড়াই মাইল-কুমারী ব্রিজ এলাকায় একটি অজ্ঞাত ডাকাত দল তাকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে পাহাড়ী এলাকার ভিতরে বেঁধে রেখে মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন এবং নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক ও স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশ হলে র্যানব তৎপরতা বৃদ্ধি করে। এর ধারাবাহিকতায় গত ৩০ জুলাই বিকেলে র্যা্ব ফোর্সেস সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় র্যাাব-১৫ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল ফাঁসিয়াখালী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে পূর্বে থেকে র্যা বের নজরদারীতে থাকা ডাকাতি চক্রটির মূলহোতা তৈয়ব’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত তৈয়ব তার নেতৃত্বে গঠিত ডাকাত দলের চক্রটির ৮-১০ জনের নাম প্রকাশ করে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাসবের আভিযানিক দল ফাঁসিয়াখালী এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে হাবিব, মিজান ও মোবারক নামে আরও ৩ জন ডাকাত’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেফতারকৃতদের নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার জামিলুল হক জানান, গত ২৯ জুলাই ডাকাতির মোটরসাইকেলটি ফাসিয়াখালীর দক্ষিণ ঘুনিয়া এলাকা তৌহিদুল ইসলাম এর বসত বাড়িতে আছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে রান্নাঘরের ভিতর থেকে ৩টি মোটরসাইকেল উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়।

সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতার ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে র্যা্বের আভিযানিক কার্যক্রম চলমান থাকে। গ্রেফতারকৃত চক্রটিকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র তারা কক্সবাজারের চকরিয়া থানাধীন ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের ঘোনারপাড়া গ্রামের করুল্লিয়াশিয়া রাস্তার পশ্চিম পার্শ্বের ঝোপের ভিতর মাটির নিচে পুঁতে রেখেছে। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত ডাকাত চক্রটিকে সঙ্গে গতকাল ভোররাতে ওই স্থানে অভিযান পরিচালনা করে তাদের দেয়া ভাষ্য ও দেখানো মতে মাটির নিচে পুঁতে রাখা অবস্থা হতে ৪টি দেশীয় এলজি, ২টি দেশীয় রামদা ও ৫ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার জামিলুল হক আরও জানান, গ্রেফতারকৃত চক্রটিকে অন্যান্য ডাকাতির ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, গত ৩০ মে রাত মধ্যরাতে ডাকাত চক্রটি চকরিয়া’র গ্যাস, জ্বালানী তৈল, গ্যাস চুল্লি ব্যবসায়ী মোঃ এমরানুল হককে চকরিয়া পৌরসভাধীন ৩নং ওয়ার্ডের বাটাখালি আবু তাহের মেম্বারের বাড়ির সামনে অতর্কিত হামলা করে এবং ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে নগদ ১ লাখ ২৪ হাজার ৩০০ টাকা ও মোবাইল ফোন জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এছাড়াও চকরিয়ায় সংঘঠিত বেশকিছু ডাকাতির ঘটনার সাথে তাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে জানা গেছে।

সারাদেশ-এর আরও খবর