বনশ্রীতে গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার, বাড়িতে আগুন দিলেন বিক্ষুব্ধরা

  বিশেষ প্রতিনিধি    01-01-2024    17
বনশ্রীতে গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার, বাড়িতে আগুন দিলেন বিক্ষুব্ধরা

নানা অ্যানিমেশন সিনেমায় আমরা উড়ন্ত ড্রাগন দেখতে পাই। রূপকথায় উড়ন্ত ড্রাগনের মুখ দিয়ে আগুন বের হওয়ার গল্প সবারই জানা। বিজ্ঞানীরা অন্য রকম কাজ করতে ভালোবাসেন। এবার তাঁরা আগুন নেভাতে উড়ন্ত ড্রাগন তৈরি করছেন।

বিজ্ঞানীদের এই উড়ন্ত ড্রাগন আসলে একধরনের রোবট। এই বিশেষায়িত রোবট জাপানের ফুকুশিমায় ২০২১ সালের অক্টোবরে প্রদর্শন করা হয়। বিশ্ব রোবট সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ড্রাগন রোবটটি অগ্নিনির্বাপনের নমুনা প্রদর্শন করে। আগুন নেভানো যায় না, এমন দূরবর্তী অগ্নিকাণ্ডের স্থানে এই উড়ন্ত রোবট পাঠাতে চান জাপানি গবেষকেরা। ড্রাগন ফায়ার ফাইটার নামে অভিনব ফায়ার ফাইটার রোবট নিয়ে একটি গবেষণাপত্র ফ্রন্টিয়ার্স ইন রোবোটিকস অ্যান্ড এআই নামের সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণায় রোবটটির একটি নকশা যুক্ত করা হয়েছে।

সারা বিশ্বের রোবোটিকস নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা ড্রাগন ফায়ারফাইটারের নকশা ধরে কাজ করতে পারবেন। জাপানের ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. ইউচি আম্বে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে একটি চার মিটার দীর্ঘ দূরবর্তীভাবে নিয়ন্ত্রণযোগ্য উড়ন্ত ফায়ারহোস রোবটের নমুনা বা প্রোটোটাইপ উপস্থাপন করেছি। এই রোবট সরাসরি আগুনের উৎসের কাছে গিয়ে নিরাপদে ও দক্ষতার সঙ্গে ভবনে আগুন নেভাতে কাজ করতে পারে। আমরা অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনায় দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলার জন্য রোবট তৈরি করছি। আমরা একটি ড্রাগন ফায়ারফাইটার বা ডিএফএফ নামের রোবটের ধারণা নিয়ে কাজ করছি। একটি উড়ন্ত-পাইপ-টাইপের অগ্নিনির্বাপক রোবটের দুনিয়া আমরা উন্মুক্ত করছি। এ নিয়ে আমরা এখনো কাজ করছি।

রোবটের মাধ্যমে আগুন নেভানোর জন্য অনেক রোবোটিক পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা চলছে। স্নেক ফায়ারফাইটার রোবটের একটি প্রোটোটাইপ তৈরি করা হয়েছে। এটি একটি তারের মতো রোবট। হামাগুড়ি দেওয়ার মতো রোবট, যা পানির চাপে চলে। টানেলসহ বিপজ্জনক পরিবেশে আগুন নেভানোর জন্য এটি ব্যবহার করা যায়। অন্যদিকে শার্ক রোবোটিকস কলোসাস নামের আরেকটি অগ্নিনির্বাপক রোবট আলোচনা তৈরি করেছে। এটি একটি ক্রলার ধরনের রোবট। এই রোবট আগুন নেভানোর পাশাপাশি ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করতে ও আগুনের দৃশ্য সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে সহায়তা করে।

জাপানের তোহোকু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাতোশি তাদোকোরোর গবেষণাগারের ২০১৬ সালে এমন উড়ন্ত রোবট নিয়ে প্রথম কাজ শুরু হয়। এরপর আরও গবেষক যুক্ত হয়ে বর্তমান নকশা করেন। নকশা করার মতো সত্যিকারের অগ্নিনির্বাপক দলের সদস্যদের মতামত নিয়ে নানান কিছু যুক্ত করা হয়েছে।

ড্রাগন ফায়ার ফাইটারের ফায়ারহোস বা পানি পরিবহনকারী পাইপটি ভিন্ন রকমের। আটটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য পানির জেট ইঞ্জিনের মাধ্যমে ওপরের দিকে উড়তে পারে। ভূমি থেকে প্রায় দুই মিটার ওপরে উড়তে পারে। ফায়ারহোস আগুনের গতি বুঝে আকৃতি পরিবর্তন করতে পারে। পরিস্থিতি বুঝে অগ্নিশিখার দিকে ছুটে যেতে পারে। রোবটটির পেছনে চাকাযুক্ত কার্ট আছে, যা একটি কন্ট্রোল ইউনিট দ্বারা পরিচালিত হয়। এই কার্ট পাইপের মাধ্যমে ১৪ হাজার লিটার পানি সংরক্ষণ করা যায়, এমন ফায়ার ট্রাকের সঙ্গে যুক্ত থাকে। রোবটটি এক মেগাপ্যাসকেল চাপ নিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৬.৬ লিটার হারে পানি ছিটাতে পারে। ইমেজিং ক্যামেরা থাকার কারণে আগুনের অবস্থান খুঁজতে পারে রোবটটি।

আগামী ১০ বছরের মধ্যে রোবটটি উড়তে বাজারে আসবে বলে গবেষকেরা জানিয়েছেন। বিজ্ঞানী আম্বে বলেন, ‘বিশ্বের অগ্নিনির্বাপক পরিস্থিতি উন্নয়নে আমাদের রোবটটি আসতে ১০ বছরের মতো সময় লাগবে। ১০ মিটারের বেশি প্রসারিত করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

সারাদেশ-এর আরও খবর